Search

গল্প:প্রণয়ভঙ্গ

  • Share this:

নিয়ম অনুযায়ী যেদিন বিয়ে তার আগের দিন গায়ে হলুদ হয় কিন্তু আমার বেলায় ভিন্ন ছিল। যেদিন গায়ে হলুদ সেদিন সন্ধ্যায় আমার বিয়ে।

আহিলের মূলত ছুটি ছিল না। এই অল্প সময়ের মধ্যে গায়ে হলুদ, বিয়ে,রিসিপশন আরও অনেক নিয়ম কারণ পালন করার জন্য অনেক দিন সময় লাগতো।এত সময় আহিলের কাছে ছিল না।তাই দুই পরিবারের সম্মতিতেই বিয়ে হচ্ছিল।

আহিল আমার বাবার বন্ধুর ছেলে। সেই সুত্রে আহিল আর আমি ছোট বেলার বন্ধু। এক সাথে বড় হয়েছি একই সাথে স্কুল, কলেজ পার করেছি।ইউনিভার্সিটিতে উঠতেই আহিল পড়া শোনার জন্য দেশের বাইরে চার্ন্স পেয়ে গেল।সেখানেই পড়াশোনা শেষ করে চাকরি তে জয়েন করে।

এই পাঁচ বছরের প্রতিদিনই আহিলের সাথে আমার যোগাযোগ ছিল। তার প্রতি ভীষণ ভালো লাগা কাজ করতো।কবে যে ভালোবেসে ফেলেছি বুঝিনি। শুধু বন্ধুত্বের খাতিরে বলতে পারতাম না।হঠাৎ একদিন আহিলের মেসেজ দেখে বেশ অবাক হয়ে যাই।মেসেজটা ছিল এমন—

"রাফিয়া তুই কি আজ বিকেল ৪ টা বাজে আমার প্রিয় জায়গা টায় আসতে পারবি।তোর জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।"

মেসেজ সিন করে আমি আহিলের কাছে ফোন করি। কিন্তু তার ফোন বন্ধ ছিল। আমি বুঝতে পারছি না দেশের বাইরে থেকে আমার জন্য সে কি সারপ্রাইজ রেখেছে! দেখতে দেখতে বিকেল ৪ টা বাজলো। আমি তার প্রিয় জায়গাটায় উপস্থিত হলাম। লেকের পাড় ঘন সবুজ ঘাস পাড় জুড়ে। চারপাশে ঘন জঙ্গল। স্বচ্ছ পানি টলমল করছে।আহিলের যখন মন খারাপ হতো এই জায়গা টায় এসে ঘন্টা খানেক বসে থাকতো। আবার বেশি খুশি হলেও এই জায়গায় আসতো।বসার জন্য নিজ হাতে একটা মাঁচা বানিয়েছিল।এখন আমি সেই মাচার উপর ই বসে আছি।

ঘন্টা খানেক পার হয়ে গেল কিন্তু কিছুই ঘটলো না।আশেপাশে কোনো লোকজন ও নেই।এবার আমার একটু ভয় লাগতে শুরু করলো। মনে মনে আহিলের বাচ্চা আহিলকে বিশ্রি কয়েকটা গালি দিলাম।বিরক্ত হয়ে আমি বাড়ি ফেরার জন্য হাঁটা শুরু করলাম হঠাৎ পেছন থেকে কেউ একজন আমার হাত টেনে ধরলো।হাত কে টেনে ধরেছে দেখার উদ্দেশ্যে পেছনে তাকাতেই আমি এক ঝটকা খেলাম আহিল স্ব শরীরে আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।তারমানে সে অনেক আগেই এখানে এসেছে এবং লুকিয়ে আমার কান্ড দেখছিলো।রাগে বিন্দু বিন্দু ঘাম আমার নাকে জরো হতে লাগলো চোখ মুখ শক্ত করে আহিলকে গালি দেওয়ার আগেই সে আমাকে আরো অবাক করে দিয়ে হাটু গেরে বসে প্রপোস করলো।

প্রপোস করার ধরন টা ছিল কিছুটা এমন—

"আজ এ অবেলায়, মেঘলা সন্ধ্যায়,শ্রাবনের বৃষ্টি মুখর দিনে,,আমি আমার প্রেয়োসিকে আকুল ভাবে প্রেম নিবেদন করছি। তুমি কি হবে আমার প্রমিকা?"

মূহুর্তেই আমার সব রাগ উবে গেল। কি বলল আহিল এই মাত্র নিজের কানকে বিশ্বাস করাতে পারছি না।আমি পাথরের মতো দাঁড়িয়ে আছি।সারা শরীর বেয়ে শীতল শ্রোত বয়ে যাচ্ছে। আমার চোখের সামনে যা ঘটছে তা কি আদৌ সত্য নাকি বিভ্রম!আমি নড়াচড়া না করে পলকহীন ভাবে আহিলের দিকে তাকিয়ে আছি।আমাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে আমার বাহুতে ধাক্কা দিল আহিল।আমি সাথে সাথে ঘাসের উপর লুটিয়ে পড়লাম।

আহিল আমার পাশে বসে গালে আলতো থাপ্পড় দিয়ে বললো,

"রাফিয়া,এই রাফিয়া।"

আমি চোখ খুলে উঠে বসলাম।আহিল ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি ভ্যা ভ্যা করে কিছুক্ষণ কাঁদলাম।চোখের জলে নাকের জলে আহিলের শার্ট ভিজিয়ে ফেলেছি। আমাকে কাঁদতে দেখে আহিল দাঁত বের করে হাসছে।ওর হাসি দেখে আমার সারা শরীর জ্বলছে অথচ ওর হাসিটা কতই না সুন্দর, স্নিগ্ধ।অন্য সময় হলে আমি মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে থাকতাম কিন্তু এখন আমার প্রচন্ড রাগ হচ্ছে।রাগে আমি কয়েকটা কিল, ঘুসি ও লাথি মারলাম আহিল কে।

— আরে আশ্চর্য! করছিস কি লাগছে তো।

— লাগুক, আরো মারবো তোকে।তুই দেশে আসছিস আমাকে বলিস নি কেন?আর তোকে কতবার ফোন করেছি মোবাইল অফ করে রেখেছিস কেন?

— এই যে স্ব শরীরে তোর সামনে হাজির হয়ে চমকে দিলাম খুশি হোস নি?

— হ্যা হয়েছি।আবার রাগ ও হচ্ছে।

— আর আমি যে এত সুন্দর করে প্রেম নিবেদন করলাম তার কি হবে?

— তোর প্রেমের গুষ্টি কিলায়।কে বলছে আমি তোর প্রেমিকা হবো। কোনো দিনও হবো না।বলেই হাঁটা শুরু করলাম।

আহিল ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললো,

"নো প্রবলেম।"

পায়ে হাত দিয়ে ঢং করে আবার ও বললো, "তোর মতো ডাইনি,শাঁকচুন্নি,পেত্নী কে বিয়ে না করায় ভালো। যে বিয়ের আগে হবু বর কে তুই তুই করে আবার লাথি মেরে পা ভেঙ্গে দেয়।আংকেল যে কেন এই ভুতনিটাকে আমার গলায় ঝুলিয়ে দিলো।হাই রে আহিল এখন যে তোর কি হবে?"

আমি ঘুরে দাঁড়িয়ে বললাম, "বিয়ে মানে?"

— বিয়ে মানে বিয়ে।তোর সাথে আমার বিয়ে।

— আমি দৌঁড়ে আহিলের কাছে গেলাম।কি বলছিস তুই আমি কিছুই বুজতে পারছি না।

—আজ থেকে ঠিক দুই দিন পরে রাফিয়া নামের একটি মেয়ের সাথে আমার বিয়ে।ছোট বেলা থেকেই ঠিক করা শুধু যার সাথে বিয়ে সেই জানে না। সে এতক্ষণ ভুতের মতো আমার সামনে কান্না করছিলো।আমাকে বাহুডোরে আকড়ে ধরে কথা গুলো বললো।

আমি আহিলের হাত থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে বললাম, "সবাই আগে থেকে সবকিছু প্লান করে রেখেছিস অথচ আমাকে কেউ কিছু বলিস নি।তোর সব কয়টা স্বার্থপর।"

–বললে তো সারপ্রাইজই হতো না, তাই না?

আমি চোখ মুখ শক্ত করে তাকিয়ে রইলাম।

আহিল তার সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে চিৎকার করে বললো,"ভালোবাসি, ভালোবাসি,ভালোবাসি রাফিয়া, ভালোবাসি আমি তোকে।"

ভালোবাসার মানুষ কে এত সহজে পেয়ে যাবো ভাবি নি।সেদিন কতক্ষণ কেঁদেছি আহিলের পাশে বসে জানা নেই।

তুই থেকে তুমি বলার অভ্যাস করেছি ঘন্টার পর ঘন্টা। ভাবা যায় এত দিনের তুই -য়ের সম্পর্ক দুদিন পরে তুমিতে পরিনত হচ্ছে। এই দুই দিনে ঘুরতে যাওয়া, শপিং করা,রাত করে ফোন আলাপ সব কিছুই হয়েছে আহিলের সাথে। বিয়ের পর আহিলের আমাকে নিয়ে দেশের বাইরে ফিরে যাওয়ার কথা।

দিনটি ছিল শুক্রবার। শ্রাবনের বৃষ্টি মুখর দিন।আমার বাগানে কামীনি ফুলের সমারোহে ভরে উঠেছে।সকাল থেকে বাড়ি ভর্তি মেহমান গমগম করছে।বাচ্চারা দৌড়াদৌড়ি করছে।

একটু পরপর শত কাজের ভিরে আম্মু আমার ঘরে আসছে।চোখের জল লুকিয়ে আদর করছে।তার একমাত্র মেয়ের বিয়ে তাও আবার দুদিন বাদে দেশের বাইরে চলে যাবে।বুকের ভেতর হাহাকার করলেও হাসি মুখে সকল কাজ করছে।

ছোট চাচ্চু এসে বারবার বলছে, "কিরে পুঁচকি আজ তোর বিয়ে!এত তাড়াতাড়ি কবে বড় হয়ে গেলি?এই তো সেদিন এতটুকু ছিলো কাঁথায় মুড়িয়ে রাখতাম আর তুই ভ্যা ভ্যা করে কাঁদতি।"

আমি সেদিন কান্না করে ছোট চাচ্চুকে জরিয়ে ধরেছিলাম। এই একটা মানুষ যে আমার শত মন খারাপে পাশে থেকেছে। ভালোবেসে সব কষ্ট ভুলিয়ে দিয়েছে। মুখ ফুটে কোনো কথা বলার আগেই বুঝে ফেলেছে।

গায়ে হলুদের জন্য আমি আমার ঘরে রেডি হচ্ছি। জানি না হঠাৎ করে আহিল কোথায় থেকে আমার ঘরে চলে আসলো।তার তো এখন তাদের বাড়িতে থাকার কথা তার ও গায়ে হলুদ। আর বাড়ি ভর্তি লোকজনের চোখে ফাঁকি দিয়ে আমার ঘরে আসলো কিভাবে দরজা তো ভেতর থেকে বন্ধ।

আমি ভুত দেখার মতো চমকে উঠে চিৎকার করে বললাম,"একি তুমি! এখানে কি করছো?"

আহিল আমার মুখ চেপে ধরলো। আমার মুখে হাত দিয়ে বললো, "চুপ"

আহিল সাদা ধবধবে পায়জামা-পাঞ্জাবি পড়েছে। সিল্কি চুলগুলো জেল দিয়ে খাড়া করে রেখেছে। গোলাপি ঠোঁট হালকা নড়ছে।আমি পলকহীন ভাবে তার দিকে তাকিয়ে আছি।আহিল

আমার কোমরে চিমটি কেটে বললো,"রাফিয়া আর তো মাত্র কয়েক ঘন্টা তারপর আমাকে তোমার সামনে বসিয়ে যত ইচ্ছা দেখো।"আহিলের মুখে দুষ্টু হাসি।আমি লজ্জা পেয়ে চোখ সরিয়ে নিলাম।

_তুমি আসলে কি ভাবে?

–ম্যাজিক।

–সত্যি করে বলো তো ফাজলামি না করে।

–বাড়ির পেছনের দেওয়াল টপকে। পাইপ বেয়ে তোমার ঘরের দক্ষিণ দিকের জানালা টা খোলা ওটা দিয়ে।

আমি রাগি স্বরে বললাম, "কি দরকার ছিল যদি পরে যেতে।"

–বউকে দেখা র জন্য এতটুকু রিস্ক তো নিতেই পারি তাই না?বলতে বলতে আমার গালে কপালে গলায় হলুদ মাখিয়ে দিল। উফ এতখনে আমি খেয়ালই করি নি আহিলের হাতে হলুদের বাটি।

–আমার বউকে আমি সবার আগে হলুদ মাখাবো

আর আমার বউ আমাকে সবার আগে হলুদ মাখাবে তাই এত কষ্ট করে আসা।

আমার কোমড়ে হলুদ মাখা পাঁচ আঙুলের ছাপ বসিয়ে দিল।তার হলুদ মাখা মুখটা আমার মুখের সাথে আলতো করে ঘসতে লাগলো।খোঁচা খোঁচা দাড়ি তে কেমন যেনো অনুভূতি হচ্ছে। চোখ বন্ধ করে দু হাতে শাড়ি খামছে দাঁড়িয়ে আছি।

হঠাৎ কে যেনো ধরাম ধরাম করে ঘরের দরজায় ধাক্কা মারছে।রাফিয়া, এই রাফিয়া দরজা খোল। কি করছিস তুই ভেতরে?

আমি ছিটকে আহিলের থেকে দুরে সরে আসলাম। আহিল ঠোঁট বাঁকা করে হেসে যেমন ভাবে এসেছিল ঠিক তেমনি ভাবে আবার চলে গেল।আমি উপর থেকে নিচে তাকিয়ে আছি।ভয়ে আমার বুক কাঁপছে যদি হাত ফস্কে পড়ে যায় নিচে।

এদিকে আম্মু দরজা ধাক্কাচ্ছে।আমি ভেতর থেকে বললাম, "আম্মু তুমি যাও আমি আসছি ১০ মিনিটে র ভিতর।"

সন্ধ্যা ৭ টায় পার্ল্লার থেকে দুজন মেয়ে আসলো। আমাকে সুন্দর করে বউ সাজালো।এর মাঝে আহিল যে কতবার কল করেছে তার ঠিক নাই। তার বউকে সে সবার আগে বউ সাজে দেখবে।আমি লজ্জায় সেদিন কল রিসিভ করতে পারি নি ভিডিও কল কেটে অডিও কলে কথা বলেছি।

বউ সেজে আমি আমার ঘরে বসে অপেক্ষা করছি।তখনি আম্মু এসে চিন্তিত গলায় বলল,

"রাফিয়া আয় আমার সাথে এক জায়গায় যেতে হবে।"

কথা টা বলার সময় আম্মু অস্বাভাবিক ভাবে কাঁপছিল। ভয়ে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিল না।

আমি জিজ্ঞেস করলাম, "কি হয়েছে আম্মু? কোথায় যাবো?আর তুমি এত অস্থির হয়ে আছো কেন?"

"বেশি কথা বলার সময় নাই চল আমার সাথে" বলেই হাত ধরে হুর হুর করে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো।

এবার আমার মনের ভেতর কু গাইতে লাগলো।ভয়ে আমি কেঁদেয় ফেলেছি।জরানো কন্ঠে বললাম,

"কি হয়েছে? বলো না আম্মু আমার খুব ভয় করছে।আব্বু চাচ্চু বাড়ির সবাই কোথায় কাউকে দেখতে পাচ্ছি না কেন?"

"সবাই হসপিটালে আছে।"

এই পর্যায়ে আমি চিৎকার করে বললাম, "কার কি হয়েছে বলো না আম্মু?"

"আহিল এক্সিডেন্ট করছে।আই সিউ তে ভর্তি করানো হয়েছে।খুব খারাপ অবস্থা।"

কথাটা যেন তীরের গতিতে আমার মাথায় ঢুকলো।আমার পায়ের তলার মাটি মনে হয় একটু একটু করে সরে যাচ্ছে। মাথার ভেতর চিনচিন শব্দ হচ্ছে একাধারে। মনে হচ্ছে কেউ হাতুড়ি পেটা করছে।শরীরে ঝাঁকুনি তৈরি হচ্ছে। আমার অস্থিত্ব শুন্যে মিলিয়ে যাচ্ছে। আমি কথা বলতে পারছি না চিৎকার করে কাঁদতে পারছি না। চোখগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

জ্ঞান ফেরার পর হাসপাতালের বেডে সুয়ে আছি।আমার চারপাশে আম্মু-আব্বু ছোট চাচ্চু, আমার বেস্টু আদ্রিতা বসে আছে।সবার চোখ মুখ লাল হয়ে আছে পাশের রুম থেকে একজন মহিলার চিৎকার করে কাঁন্নার শব্দ আসছে।আমি সবকিছু দেখতে পাচ্ছি শুনতে পাচ্ছি কিন্তু কোন কিছুই রিয়াক্ট করতে পারছি না।কথা বলার শক্তি ও বোধ হয় হারিয়ে ফেলেছি।

আম্মু আমাকে ধরে ধরে একটা রুমে নিয়ে গেল।সাদা কাপড়ে ঢাকা রক্তাক্ত অবস্থায় পরে আছে আমার প্রিয় মানুষ টা।আমি হাউমাউ করে কেঁদে উঠলাম।চিৎকার করে বললাম,

"আহিল তুমি কথা বলছো না কেন? উঠো না আহিল উঠো না।দেখো আমি বউ সেজে তোমার জন্য অপেক্ষা করছি।তোমার তো আমাকে নিতে আসার কথা ছিল।তুমি হাসপাতালের বেডে কেন সুয়ে আছো?তোমার রাফিয়ার কষ্ট হচ্ছে তুমি কি দেখতে পাচ্ছো না।তুমি এত স্বার্থপর কেন?আমায় রেখে চলে গেলে কেন? উত্তর দেও।"

চিৎকার করে কান্না আসছে কিন্তু আমি কাঁদতে পারছি না।আম্মু এসে আমাকে জরিয়ে ধরে কাঁদছে।আমার সারা শরীর আবারও ঝিমঝিম করছে। মনে হচ্ছে আমি মারা যাচ্ছি।

তারপর থেকে আমার দিন গুলো চার দেওয়ালের অন্ধকার ঘরেই কেটেছে।বাইরের জগতের ক্ষীণ আলোও আমার সহ্য হতো না।কিভাবে দিনগুলো পার করেছি আমি নিজেই জানি না।

আজ ১ বছর হলো আহিল নেই।সে আর কোনো দিনও ফিরে আসবে না।আমি তাকে কতটা ভালোবাসি তা সে কোনও দিনও জানতে পারবে না। ভেবেছিলাম তাকে ছাড়া বাঁচবো না কিন্তু কেউ কাউকে ছাড়া মরে যায় না।আমিও মরি নি বেঁচে আছি।তাকে ছাড়া থাকতে কষ্ট হয়। স্মৃতি গুলো ভীষণ কাঁদায় ভুলতে পারি না।অনেকবার আত্নহত্যা করার চেষ্টা করেছি। প্রত্যেকবারই ওর স্মৃতি গুলো আমায় বাঁধা দিয়েছে।তার সাথে কাটানো সুখকর স্মৃতি গুলো নিয়ে বেঁচে থাকতে আস্বাশ দিয়েছে

"এপারে অপূর্ণ তা নিয়ে না হয় ওপারেই পূর্ণতা পেলাম।অপূর্ণতায় পূর্ণ আহিল তোমার রাফিয়া।"

আদ্রিতা ডাইরিটা বন্ধ করলো।চোখের জল মুছে যত্ন করে ডাইরিটা কাবার্ড এ তুলে রাখলো।আজ এক মাস হলো রাফিয়া কে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।হয়তো আর কোনো দিনও খুঁজে পাওয়া যাবে না।সে স্বেচ্ছায় উধাও হয়ে গেছে।আদ্রিতা বিরবির করে উচ্চারন করলো,

"তুই যেখানেই থাকিস যেন ভালো থাকিস রাফিয়া।"

 

★★★সমাপ্ত★★★

কলমে: মানহা সেহরিশ

Tags:

About author
StorialTech is an admin of this multi-platform website. StorialTech shares stories, tutorials, web templates, pdf books, and movies for you to easily access anything related to this website.
Comments (1)
storialtech-user-avatar

গল্পটা আমার কাছে অনেক ভালো লাগছে । খুব সুন্দর একটা গল্প ছিল । https://tribunenewsbd.com

ruhul amin 2 years ago