পড়ানোর সময় হঠাৎ খেয়াল করলাম আমার ছাত্রী প্রিয়তা খুব সুন্দর করে সেজেছে।প্রিয়তা শ্যামবর্ণের হলেও খুব মায়াবতী একটা মেয়ে । ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক, কপালে কালো ছোট টিপ, চোখে কাজল আর খোলা চুলে প্রিয়তাকে আজ আরো বেশি মায়াময় লাগছে। আজকাল প্রিয়তা আমার সাথে একটু অন্যরকম ব্যবহার করছে। আমার দিকে একটু অন্য রকম ভাবে তাকায়। কখনো যদি আমার চোখে চোখ পড়ে তাহলে লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেলে। অবশ্য এটা বয়সের দোষ। সময়ের সাথে সাথে এই দোষ কেটে যাবে। আমি প্রিয়তার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললাম,
-- তোমাকে সমরেশে মজুমদারের দীপার মতো লাগছে
প্রিয়তা অবাক হয়ে বললো,
-" দীপা কে?"
আমি তখন বললাম,
-- সমরেশ মজুমদারের লেখা সাতকাহন উপন্যাসের নায়িকা
হঠাৎ খেয়াল করি দরজার পর্দার আড়াল থেকে কে যেন প্রিয়তাকে ডাকছে। গলার স্বরটা আমার পরিচিত মনে হয় নি। হতে পারে ওদের বাসায় কেউ বেড়াতে এসেছে। ডাক শোনার সাথে সাথে প্রিয়তা তড়িঘড়ি করে রুম থেকে বের হয়ে গেলো...
প্রিয়তাকে আমি ৩ বছর ধরে পড়াচ্ছি। এখন ও ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে। এতদিন ধরে পড়ানোর ফলে আমি ওদের পরিবারের একজনের মত হয়ে গেছি। আংকেল আন্টি যেকোন বিষয় আমার থেকে পরামর্শ নেন আর তেমনি আমিও বিভিন্ন সময় উনাদের কাছ থেকে সাহায্য সহযোগিতা নেই
৫ মিনিট পর প্রিয়তা যখন রুমে ঢুকলো তখন খেয়াল করি ওর কপালে টিপ নেই, দুইচোখে কাজল লেপ্টে আছে, ঠোঁটে লিপস্টিক নেই আর চুল বেণি করা। আমি অবাক চোখে প্রিয়তার দিকে তাকিয়ে বললাম,
-- কি হয়েছে তোমার?
প্রিয়তা মুখ গম্ভীর করে নিচের দিকে তাকিয়ে বললো,
-" কিছু হয় নি"
প্রিয়তাকে পড়ানো শেষে যখন চলে যাবো তখন খেয়াল করি ড্রয়িংরুমে প্রিয়তার বাবা মা আর ব্রয়লার মুরগীর মতো সাদা টাইপের ফর্সা একটা মেয়ে বসে চা খাচ্ছে। মেয়েটাকে ব্রয়লার মুরগী বলার অবশ্য কারণ আছে। মাত্রাঅতিরিক্ত সুন্দরী মেয়েরা অনেকটা মন্ডার মতো হয়। মন্ডা যেমন একটা খেলে খুব ভালো লাগে কিন্তু কয়েকটা খাওয়ার পর মাথাঘুরে বমি বমি আসে তেমনি অতি ফর্সা সুন্দরী মেয়েদের প্রথম দেখাতে খুব ভালো লাগে কিন্তু কতক্ষণ তাকিয়ে থাকলে ব্রয়লার মুরগীর মতো লাগতে থাকে। এজন্যই তো কবিরা তাদের কবিতায় শ্যামবর্ণের মায়াবতী মেয়েদের জায়গা দিয়েছেন কোন ফর্সা ব্রয়লার মুরগী জাতীয় মেয়েদের জায়গা দেন নি
প্রিয়তার বাবা আমায় ডেকে বললো,
-"পিয়াস, বাসার বেডরুমগুলো রং করবো। তা কোন রং দিলে ভালো হবে?"
আমি অতি উচ্ছ্বসিত হয়ে বললাম,
-- বেডরুম হতে হবে হালকা নীল রঙের। আর বিছানার চাদর, বালিশের কভার, দরজা জানালার পর্দা সব হতে হবে ধবধবে সাদা। তাহলে ঘুমানোর সময় মনে হবে আপনি নীল আকাশের সাদা মেঘের উপর ঘুমাচ্ছেন
আমার কথা শুনে আংকেল আন্টি আর মেয়েটা এমন ভাবে আমার দিকে তাকালো, যে আমি মনে হয় অনেক বড় পাপ করে ফেলেছি। আমি আংকেলকে তখন বললাম,
-- আমি কি কিছু ভুল বললাম?
আংকেল হেসে বললো,
-"আরে না, কোন ভুল বলো নি। তুমি যে কথাটা বললে কিছুক্ষণ আগে নেহা ঠিক একই কথাটা বললো। দুইজন মানুষের পছন্দ এক হতে পারে এটা স্বাভাবিক কিন্তু দুইজনের কথা বলার ধরণ এক হওয়া এটা আসলেই একটু অবাক হওয়ার মতো
তারমানে ব্রয়লার মুরগী মতো সুন্দর মেয়েটার নাম নেহা। আমি আর তখন কিছু না বলে চুপচাপ বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম....
---
------
গতকালকের ঘটনাটা নেহা কিছুতেই মাথা থেকে সরাতে পারছে না। ছেলেটা কি করে তার বলা কথা সেইম টু সেইম বললো। পরক্ষনেই নেহার মনে হলো ছেলেটা নিশ্চয়ই ওর বলা কথাটা আড়াল থেকে শুনেছিলো। আর তাকে অবাক করার জন্যই এই কথাটা বলেছে। এইসব ফালতু ছেলেদের নেহার খুব ভালো করেই চেনা আছে। ওদের কাজেই হলো মেয়েদের নানা ভাবে চমকে দিয়ে আর রূপের প্রশংসা করে প্রেমের ফাঁদে ফেলানোর। যেমনটা করছে ওর চাচাতো বোন প্রিয়তার সাথে। প্রিয়তাকে বলে কিনা সমরেশের দীপার মতো লাগছে। কত বড় ধান্দাবাজ...
আফজাল সাহেব বাজারের ব্যাগ খুঁজছিলো। নেহা আফজাল সাহেবের হাতে বাজারের ব্যাগটা দিয়ে বললো,
-" চাচা, আজ বাজার থেকে মলা মাছ এনো তো আর সাথে একটু বড় সাইজের জাম আলু( একধরনের লাল আলু) আর বেগুন নিয়ে এসো। মলা মাছের সাথে জাম আলু চিকন চিকন করে কেটে অল্প কয়েকটা বেগুন দিয়ে হালকা ঝোল করে রান্না করলে তরকারি খুব মজা হয়। আজ আমি নিজে এমন ভাবে রান্না করবো"
আফজাল সাহেব নেহার দিকে তাকিয়ে হেসে বললো,
-"আচ্ছা ঠিক আছে। মলা মাছ পেলে নিয়ে আসবো"...
---
-----
প্রিয়তাকে যখন পড়াতে আসলাম তখন নেহা নামের মেয়েটা প্রিয়তাকে বলছে,
-" শুন আজ থেকে তোর টিচারকে নিয়ে ড্রয়িংরুমে পড়তে বসবি। নিজের বেড রুমে নিয়ে এসে পড়তে বসিস কেন?
আন্টি তখন বললো,
-"আরে কোন সমস্যা নেই। পিয়াস তো আমার নিজের ছেলেই"
নেহা তখন কিছুটা রেগে আন্টিকে বললো,
-" চাচী, ফালতু কথা বলো কেন? তুমি কি উনাকে তোমার পেটে ধরেছো যে নিজের ছেলে বলছো?
আমি কথাগুলো কোন রকম হজম করে প্রিয়তাকে নিয়ে ড্রয়িং রুমেই পড়াতে বসলাম। প্রিয়তা তখন আমায় বললো,
-" ভাইয়া, আপুর কথায় কিছু মনে করো না। আপু আগে এমন ছিলো না। কিন্তু হুট করে কেমন জানি হয়ে গেছে। ছেলেদের সহ্য করতেই পারে না"
আমি মনে মনে ভাবতে লাগলাম, সহ্য করবে কি করে নিশ্চয়ই ছ্যাঁকা খেয়ে বেকা হয়ে গেছে। যে বদরাগী মেয়ে কোন ছেলেই বেশিদিন টিকবে না
এমন সময় খেয়াল করি প্রিয়তার বাবা দু'হাত ভরে বাজার নিয়ে এসেছে। আন্টির হাতে বাজারের ব্যাগটা দিয়ে বললো,
-"নেহার পছন্দের মলা মাছ খুঁজতে খুঁজতে আমার জীবন শেষ। অবশ্য শেষে মলা মাছ খুঁজে পেয়েছি।"
আমি তখন আন্টিকে বললাম,
-- আন্টি মলা মাছ জাম আলু চিকন করে কেটে অল্প কয়েকটা বেগুন দিয়ে হালকা ঝোল করে রান্না করবেন। দেখবেন খেতে খুব মজা লাগবে।
আমার কথা শুনে আংকেল আন্টি আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকালো। আমি তখন কিছুটা ভয়ে ভয়ে বললাম,
-- আসলে আন্টি আমাদের বাসায় এইভাবে রান্না হয় তো তাই বললাম আর কি
আন্টি অবাক চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
-" তুমি মলামাছ যেভাবে রান্না করার কথা বলেছো নেহাও সে রকম ভাবে রান্না করার কথা বলেছে। বুঝতে পারছি না তোমাদের দুইজনের কথাবার্তা গুলো এইভাবে মিলে যাচ্ছে কেন"
পাশে তাকিয়ে দেখি নেহা আমার দিকে কেমন জানি রাগী চোখে তাকিয়ে আছে। আমি আর কিছু না বলে প্রিয়তাকে নিয়ে পড়াতে মন দিলাম...
|
|
নেহা কেমন জানি ছটফট করছে। এই পিয়াস নামের ছেলাটার মাঝে সে শাহী নামের একজনকে খুঁজে পাচ্ছে। এই পিয়াস ছেলেটা যদি শাহী হয় তাহলে সে কি করবে সে নিজেও জানে না। শাহীর পছন্দের তিনটা বই হলো শরৎ চন্দ্রের পরিণীতা, সমরেশ মজুমদারের গর্ভধারিণী আর নিমাই ভট্টাচার্যের মেমসাহেব। পিয়াসেরও যদি একই বই পছন্দের হয় তাহলে আর কোন সন্দেহ থাকবে না যে এটাই শাহী
নেহার এমন অবস্থা দেখে ওর চাচী ওরে বললো,
-"কিরে, তুই রান্না করবি না। তোর পছন্দের মলা মাছ তো তোর চাচা এনেছে"
নেহা ওর চাচীকে বললো,
-"চাচী আমি একটু নীলক্ষেত যাবো। আমার কয়েকটা বই কিনতে হবে"
নেহার চাচী অবাক হয়ে বললো,
-" তোর চাচা মাত্র বাজার থেকে এসেছে এখন তো তোকে নীলক্ষেত নিয়ে যাবে না। তাছাড়া ঢাকা শহরের তুই তো তেমন কিছু চিনিস না। তোর চাচা তোকে একা যেতেও দিবে না"
নেহা তখন বললো,
-" সমস্যা নেই, তোমার ঘরের ছেলেকেই না হয় বলো আমায় একটু নিয়ে যেতে"
---
-----
প্রিয়তাকে পড়ানো শেষে আমি যখন বাসা থেকে বের হবো তখন আন্টি আমায় ডেকে বললো,
-" পিয়াস, তোমার কোন কাজ না থাকলে নেহাকে নিয়ে একটু নীলক্ষেত যেতে পারবে? ও নাকি কয়েকটা বই কিনবে"
আমি কিছুটা আবাক হয়ে বললাম,
--আমার কোন কাজ নেই। কিন্তু উনি কি আমার সাথে যেতে রাজি হবে?
আন্টি বলবো,
-" নেহাই বলেছে ও তোমার সাথে যাবে"
দুইজনে রিকশা দিয়ে যখন নীলক্ষেত যাচ্ছি তখন নেহা নামের মেয়েটা আমায় হঠাৎ বললো,
-" আপনি কি জানেন প্রিয়তা যে আপনাকে ভালোবাসে?"
আমি হেসে বললাম,
-- হুম, আমি জানি। আসলে এটা বয়সের দোষ। এইবয়সে টুকটাক সবাই প্রেমে পড়ে। বড় হওয়ার সাথে সাথে এইসব ভুলে যাবে। আসলে দোষটা আমার। ওর জন্মদিনে ওকে আমি একটা সবুজ শাড়ি গিফট করে ছিলাম। সেই শাড়ি পাওয়ার পর থেকেই ও ভাবতে শুরু করেছে আমি ওকে ভালোবাসি
নেহা তখন বললো,
-"প্রিয়তা তো অনেক সুন্দর আর খুব ভালো মেয়ে। তাছাড়া চাচা চাচীও আপনায় খুব পছন্দ করে। তাহলে প্রিয়তাকে ভালোবাসতে আপনার সমস্যা কি?"
আমি হেসে বললাম,
-- আমি ওরে আমার ছোট বোনের চোখেই দেখি। তাছাড়া অন্য একটা কারণও আছে। যায় হোক বাদ দেন। তা হঠাৎ নীলক্ষেত থেকে কি বই কিনবেন?
নেহা বললো,
-"আমি তো বই সম্পর্কে তেমন কিছু জানি না। আপনার পছন্দের কয়েকটা বইয়ের নাম বলেন। যেবই গুলো পড়লে আমার ভালো লাগবে"
আমি কিছুটা সময় চিন্তা করে বললাম,
-- আপনি পরিণীতা, গর্ভধারিণী আর মেমসাহেব এই তিনটা বই পড়তে পারেন। এই তিনটা বই আমার খুব প্রিয়
এই কথাটা শুনার পর নেহা আমার দিকে প্রচন্ডরকম রাগী চোখে তাকালো। মুহুর্তে মধ্যেই ওর ফর্সা মুখটা লাল হয়ে গেলো। হুট করেই সে রিকশা থামিয়ে নেমে গেলো। আমি বুঝতে পারছিলাম না হুট করে এইভাবে রাগার কি হলো। আমি তো আর হুমায়ূন আজাদের বই পড়তে বলি নি। কিছু না বলে হুট করে অন্য একটা রিকশা নিয়ে চলে গেলো। আমি পিছন থেকে অনেকবার ডাকলাম কিন্তু নেহা শুনলো না। আমি দাঁড়িয়ে থেকে ভাবতে লাগলাম, এই মেয়ের নির্ঘাত মাথায় সমস্যা আছে...
---
-----
পরদিন প্রিয়তাকে পড়াতে গেলে দেখি প্রিয়তা মন খারাপ করে বসে আছে। আমি তখন বললাম,
-- কি হলো তোমার? মন খারাপ করে আছো কেন?
প্রিয়তা গোমড়া মুখে বললো,
-" আপনি আমায় যে শাড়িটা দিয়েছেন সেই শাড়িটা শ্রাবণী আপু নিয়ে নিছে"
আমি নামটা শুনে চমকে উঠে বললাম,
-- শ্রাবণীটা কে?
প্রিয়তা তখন বললো,
- "নেহা আপুর নামই হলো শ্রাবণী। আম্মু আব্বু নেহা বলে ডাকে তাছাড়া বাকি সবাই আপুকে শ্রাবণী বলেই ডাকে "
আমি প্রিয়তাকে তাড়াহুড়ো করে বললাম,
--তোমার আপুরা কি ময়মনসিংহ থাকে? আর তোমার আপু কি ময়মনসিংহ মেডিকেলে পড়ে?
-"হ্যাঁ"
-- তোমার আপু কোথায় এখন?
- "আপু মনে হয় ছাদে আছে "
আমি প্রিয়তাকে আর কিছু না বলে দৌড়ে ছাদে গেলাম। ছাদে এসে দেখি শ্রাবণী ছাদের কার্ণিশে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমি ওর পাশে দাঁড়িয়ে বললাম,
-- তোমার বেডরুমের দেয়াল গুলোতে কি নীল রঙ করেছো?
শ্রাবণী মন মরা হাসি হেসে বললো,
-"আন্টি কি এখনো এইরকম করেই মলা মাছের তরকারি রান্না করে?"
আমি কোন উত্তর দিলাম না। কতক্ষণ নিরব থেকে বললাম,
-- আমার সাথে কেন এমনটা করলে? তোমায় দিনের পর দিন এসএমএস করেছি কিন্তু কোন রিপ্লাই পাই নি
শ্রাবণী মাথা নিচু করে বললো,
- " সেদিন রাতে তোমার সাথে চ্যাট করা শেষে হুট করে অসুস্থ হয়ে যায়। আর এতোটা খারাপ অবস্থা হয়ে গিয়েছিলো যে আমার কোন হুশ জ্ঞান ছিলো না। হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম ২১ দিন। হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরার পর তোমায় আর ফেসবুকে খুঁজে পাই নি। তোমার কোন ফোন নাম্বার আমার কাছে ছিলো না যে তোমায় কল দিয়ে তোমার সাথে যোগাযোগ করবো। আমার আইডির মতো তোমার ফেসবুক আইডিতেও তোমার কোন ছবি ছিলো না তাছাড়া আমি যেমন তোমার কোন ছবি চাই নি তেমনি তুমিও আমার কাছে ছবি চাও নি। তাই এতো কাছে থেকেও তোমায় চিনতে পারি নি"
আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললাম,
-- যখন দেখলাম তুমি আমার এসএমএস সিন করছো না তখন আমার ভিতর কি হয়েছিলো আমি নিজেও জানি না। বন্ধুরা যখন জানলো একবছরেও আমরা কেউ কাউকে দেখি নি, কখনো ফোনে কথা বলি নি তখন বন্ধুরা আমাকে নিয়ে হাসাহাসি শুরু করে দিলো। আমি নাকি এক নাম্বারের গর্দভ। ফেইক আইডির প্রেমে পড়েছি। আমি নিজেও তখন ভাবলাম আসলেই আমি বোকা। আমি যেমন ফেইক নাম দিয়ে আইডি খুলেছি তেমনি হয়তো তুমিও ফেইক নাম দিয়ে আইডি খুলেছো। তাছাড়া মেডিকেলে পড়ে একটা মেয়ে চিনে না জানে না এমন কারো সাথে এতো কথা বলতে পারে না। তাই রাগে কষ্টে আইডি ডিয়েক্টিভ করে দেই। তোমার কথা মন থেকে বের করে দিয়ে নিজের পড়াশোনায় মন দেই..
শ্রাবণী চোখের কোণে জমে থাকা জলটা মুছে বললো,
-" তাহলে তো আমি আর তোমার মনে নেই। আমাকে তো মন থেকে বের করেই দিয়েছো"
আমি কিছু না বলে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম। আমার নিরবতা দেখে শ্রাবণী যখন চলে যেতে চাইলো তখন পিছন থেকে ওর হাতটা ধরে বললাম,
-- যদি মন থেকে বের করে দিতেই পারতাম তাহলে আজ তোমার মায়াবতী ছোট বোনের প্রেমে পড়তাম....
পশ্চিমা আকাশ লাল আভা ধারণ করেছে। কিছুক্ষণ পর সূর্য ডুবে যাবে। শ্রাবণী আমার হাতটা এখনো শক্ত করে ধরে রেখে অনবরত কান্না করছে। আমি শ্রাবণীকে একবারও কাঁদতে বারণ করি নি কারণ আমি জানি এটাই শ্রাবণীর শেষ কান্না। আজকের পর থেকে আমি শ্রাবণীর চোখের জল ঠোঁটে আসার আগেই আমি তা মুছে দিয়ে ওর ঠোঁটে হাসি ফোটাবো...
আবুল বাশার পিয়াস
Comments (0)