"তুমি শুধু আমার দেহ'কে ভালোবেসেছ, আমাকে নয়। তুমি কখনো আমার মনের কথা জানতে চেয়েছ? আমি কি চাই তা শুনতে চেয়েছ? না চাওনি। তুমি শুধু রাতের আঁধারে এ-ই দেহ ভোগ করতে আসো। ছিঃ কি জঘন্য তুমি!" চোখের দু ফোঁটা জল ফেলতে ফেলতে কথা গুলো বলেই ফেললাম।
একটা ছেলে হয়ে আমি এমন কথা বলছি, চোখের জল ফেলছি ভাবতেই অনেক হাসি পাচ্ছে। মেয়েদের মতো ঢং করে কথা বলার মজাই আলাদা। আমার কথা শুনে সে-ও অবাক দৃষ্টিতে আমায় দেখছে। আমি হঠাৎ যেন দক্ষ অভিনেতা হয়ে গিয়েছি। ঝরঝর করে দু’চোখ বেয়ে জল ফেলতে আমার কোনো অসুবিধাই হচ্ছে না।
সে কি বলবে, কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না। শুধু এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ দরজার বাইরে শব্দ হলো। দরজার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম," কে?"
"আমি তোর মা। কি হয়েছে রে? এতো রাতে কান্নার শব্দের মতো শুনলাম। তুই কি কান্না করছিস? কারো সাথে কথা বলছিস?" মা বলে উঠলো।
" কি যা তা বলছো মা? এতো রাতে আমার ঘরে আবার কে আসবে?" আমি বিরক্ত নিয়ে চেঁচিয়ে উঠলাম।
আম্মু হেসে বলল," তুই এখনও ছোটই রয়ে গেলি রে। এখনও স্বপ্নে কথা বলিস, স্বপ্ন দেখে কান্না করিস। বড় হবি কবে তুই?"
আমি হেসে দিলাম। আম্মু আমার হাসির শব্দ শুনে "ঘুমা এখন, অনেক রাত হয়েছে" বলেই চলে গেল। আমি তার দিকে তাকাতেই সে হেসে আমার গাল স্পর্শ করলো। আমি লজ্জায় সাথে সাথেই থাকে দূরে ঠেলে দিলাম। কিন্তু সে কিছুতেই মানছে না, বারবার আমার খুব কাছে চলে আসছে।
এবার তার চোখে চোখ রেখে বললাম," ঘরে স্বামী থাকতে তুমি আমার কাছে আসো কেনো? তোমার কি লজ্জা শরম কিছুই নেই?"
সে অবাক হয়ে আবার আমার দিকে তাকিয়ে রইলো। হয়তো লজ্জায় কোনো কথা বলতে পারছে না। তাকে দেখে আমার খুব হাসি পাচ্ছিল। হাসি চেপে রেখে আবার বললাম," ভালোবাসলে দিনের বেলা সবার সামনে আমার ঘরে এসো, আমায় ভালোবাসিও। সত্যি বলছি, একটুও বাঁধা দিব না। কিন্তু রাতে এমন আর করিও না প্লিজ। তোমার অত্যাচারে সারারাত ঘুম হয় না, সকালে ঘুম থেকে উঠতে দেরী হয়। তুমি কি আমার কষ্ট বুঝ না?"
তাকে চুপ থাকতে দেখে আবার বলতে শুরু করলাম," তুমি যদি সত্যি আমায় ভালোবেসে থাকো তবে তো আমায় কষ্ট দিতে না। আমার সুখের জন্য সব করতে পারতে। তোমার মনে কি আমার জন্য একটুও জায়গা নেই? এতোদিনে কি একটুও ভালোবাসতে পারোনি? শুধু কি দেহটাই প্রয়োজন তোমার? যদি আমার দেহ তোমার প্রয়োজন হয় তবে নিয়ে নেও এ-ই দেহ। শুধু কি ভোগের জন্যই আমায় চাও? তবে আসো, আসো আমায় ভোগ কর।"
এবার সে উচ্চ স্বরে হাসলো। হাসতে হাসতে বললো," আমি শুধু তোর দেহই ভোগ করতে চাই। তবে আমি একা না, আমার বান্ধবীরাও যে তোকে চায়। আজ আমরা সবাই মিলে তোর দেহ ভোগ করবো।"
আমি চিৎকার করে না বলে উঠলাম। সত্যি সত্যি কান্না করে দিয়ে বললাম," তুমি আমার এতো বড় সর্বনাশ করতে পারো না। এ-র চাইতে তুমি আমায় মেরেই ফেলো।"
এবারও সে হাসলো। তারপর?
তারপর তাঁরা সবাই মিলে আমার দেহ ভোগ করলো। সারারাত ধরে চললো আমায় ঘিরে তাদের পিকনিক। তারা আমার দু’চোখে পাতা বন্ধ হতে দেয়নি। যখন চোখ খুললাম তখন আমি হাসপাতালে ভর্তি। ডাক্তার হেসে হেসে বলছে," ভয়ের কিছু নেই। এরপর থেকে মশারী টানিয়ে ঘুমাবেন। না হলে মশারা আপনার শরীরের সব রক্ত আবার ভোগ করবে, আর আপনি ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে আবারও আমাদের হাসপাতালে ভর্তি হবেন।"
নাহিয়ান ইসলাম রুপম
Comments (0)