Search

রম্য গল্প

  • Share this:

মেঝেতে চার হাত পা ছড়িয়ে ব্যাঙ এর মতন পরে বসে বসে কাঁদছি। চরম ধরা খেয়েছি।অনলাইন থেকে পোষাক কিনে এই ৫৬বারের মতন ধরা খেলাম।জামাই বার বার পাশ থেকে মুখ ভেংচি দিয়ে বলে যাচ্ছে বার বার বারণ করেছিলাম অনলাইন থেকে কিছু কিনতে না।কে শুনে কার কথা।

ওর এমন কথা শুনে আমার কলিজায় ঘা প্রখর থেকে আরো প্রখর হয়ে গেল।

অনলাইন এ যা প্লাজো দেখেছিলাম বাসায় আনার পর দেখি একটা আস্ত লুঙ্গির মতন।এত টাকার শোক কাটিয়ে ওঠা যেই সেই বেপার না।দুদিন যেতে যেতে ভাবলাম এই শোক কাটাতে আমাকেই ব্যবস্থা নিতে হবে।

জামাই খবরের কাগজ পড়ছে। আমি গিয়ে মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললাম এ্যাই আমি ভেবে দেখলাম বিয়ের পর কখনো তোমায় কিছু দেইনি।

জামাই আমার কথা শুনে ভেবাচেকা খেয়ে বললো কই বারুদের মতন ছেলে দিছো তো একটা।

ধূর ওটা বলিনাই।উপহার।জামা, জুতা আরকি।

ও আবার খবরের কাগজে চোখ দিয়ে বললো,আর কাউর বাধাও বুঝি!আবার অনলাইন থেকে আবার আনার ধান্দা!প্লিস আমার কিছু চাইনা।

ধ্যাত!এই নেও জান, আমার বান্ধবীর বর কোরিয়া গেল।ওখানের ঐতিহ্যশালী লুঙী।তুমি না লুঙ্গি সামলাতে পারোনা।এটা পরে তুমি এদেশ-ওদেশ ভ্রমন করলেও একটুও এদিক ওদিক নড়বেনা।এটা পরে রাজারা আগে যুদ্ধ কর‍তো।তাদের মাথার খুলি জায়গা দিয়ে সরলেও মাগার লুঙ্গী জায়গার টা জায়গায়।অনেক কষ্টে আমি তোমার জন্য আনিয়েছি।বাসায় পরবা।দামীও লুঙ্গী বুঝলা?তুমি আমার সামনে পরে পরে ঘুরবা, আমি মন ভরে দেখবো।

জামাই মুচকি হাসি দিয়ে উপহার নিল।খুলেও দেখলোনা।

যাক বাবা আজ আমার মন টা একটু শান্ত হলো।ছেলেকে বললাম বাবা ভুলেও বলবানা যে আমার প্লাজো কোরিয়ান লুঙ্গী। বলে চালিয়েছি।

ছেলে আমার মা ভক্ত।সে ও সম্মতি দিয়ে বললো অকে মা।বাবাকে এরপর থেকে সব দেশের লুঙ্গী পরাবা কেমন মা?এই বলে খিলখিলিয়ে হেসে দিল

আমি ওর গালে হাত দিয়ে বললাম,ওলে বাবাটা

বিকাল নাগাত আমার ছেলে দৌড়ে এসে হাঁপিয়ে বলতেছে মা কান্ড হয়েছে।

কি হয়েছে?

-কোরিয়ান লুঙ্গীতে...

বলতে না বলতে আমি বললাম লুঙ্গীতে তোমার আব্বা পেঁচায়া পরছে?

-না মা দেখতে চলো।

ড্রয়িং রুমে গিয়ে দেখি বাবা বসে আড্ডা দিছে।আমায় দেখেই বাবা দাড়িয়ে বললো,মা রে খুইজ্জা একটা হিরার মতন জামাই পাইছি।যে কিনা আমার জন্য লাখ টাকা খরচ করে কোরিয়ান লুঙ্গি আনছে।দেখ তো মা কেমন লাগছে?

আমি তাকিয়ে দেখছি বাবার পরনে গেরুয়া রঙ্গের আমার সেই প্লাজো।

ধমক দিয়ে বললাম এটা পরে বের হয়েছো বাবা?

বাবা হাসি দিয়ে বললেন,কি বলিস মা?আমি তো ভাবছি আজ অফিসের ইফতার এ এটা পরে যাব সবাই দেখুক আমার জামাই কত্ত ভালো।

আমি রক্তচোখ নিয়ে আমার বরের দিকে তাকিয়ে আছি। বর দাঁত কেলিয়ে বলছে ঐতিহ্য তো..এটা পরে ইফতার মাহফিল কেন!চান্দের দেশেও যাওয়া যায়। উল্টায়া পরার চাঞ্চ নাই কি বলো?

#Umme Nipa

Tags:

About author
আমি গল্প এবং বই প্রেমিক একজন মানুষ। গল্প এবং বই পড়তে খুবই ভালোবাসি। যেখানেই যে গল্প অথবা কাহিনী খুজে পাই সেগুলো সংগ্রহ করি এবং আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করি। আমি নিজেও কয়েকটি গল্প লিখেছি তবে সেগুলোর সংখ্যাটা খুবই সামান্য।