অ্যাপার্টমেন্টের দারোয়ান হাঁপাতে হাঁপাতে মারিয়া বেগমকে বলল, “ম্যাম সাহেব, বড় সাহেব হঠাত্ মাডিত হুইয়া পড়ছে। তাত্তারি আহেন।” হায় আল্লাহ বলে মারিয়া বেগম ছুটলেন গ্রাউন্ড ফ্লোরে। পিছু পিছু তার বড় ছেলে আলামিনও। তারা এসে দেখলেন বুকে হাত রেখে হারুন উদ্দিন মেঝেতে পড়ে আছে। অতঃপর দ্রুত তাকে হাসপাতালে আনা হলো। কিছুক্ষণের মধ্যে ছোট ছেলে আমিনও চলে এলো। সঙ্গে এসেছে তার স্ত্রীও।
আমিনঃ ভাইয়া, এসব কিভাবে হলো?
আলামিনঃ জানি না। বাবা মেঝেতে পড়েছিল। দারোয়ান এসে খবর দিয়েছে।
- ডাক্তার কি বলেছে?
- এখনো কিছু বলেনি। কিছু টেস্ট করেছে। চেকআপ চলছে।
- মা কোথায়?
- বাবার কেবিনের সামনে বসে আছে।
চোখের জল মুছতে মুছতে নূরী এগিয়ে আসছে। হারুনের একমাত্র ছোট মেয়ে।
হারুন উদ্দিন, দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তার সংসার। একটা সময় তার বেশ অর্থ সম্পত্তি ছিল। কিন্তু সময়ের সাথে তা লোকশানের খাতায় হারিয়ে গেল। তবে তিনি তার সন্তানদেরকে উচ্চ শিক্ষিত করেছেন। বড় ছেলে সিএ করেছে। এখন বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি করে। ছোট ছেলে ইঞ্জিনিয়ার। আর মেয়েকে ডাক্তারি পড়াচ্ছেন। গত দুই বছর ধরে তিনি ব্যবসা ছেড়ে বড় ছেলের সাথেই আছেন। ছোট ছেলে স্ত্রী নিয়ে অন্য এলাকায় থাকে। উপর থেকে দেখে সুখী মনে হলেও ভেতরে ভেতরে বেশ অশান্তিতে আছেন হারুন। তার সমস্ত চিন্তা ঘিরে তার ছোট মেয়ে নূরী। ছোট থেকেই নূরীর শখ ডাক্তার হবে। হারুনও তাকে সমর্থন দিয়ে এসেছেন। কিন্তু বর্তমানে তার আর্থিক অবস্থা খুবই করুণ। আর এদিকে নূরীর ডাক্তারি শেষ করতে আরও লাখ তিনেক টাকা লাগবে। এরমধ্যে মেয়ের বিয়ে নিয়েও তিনি বেশ উদ্বিগ্ন। সব মিলিয়ে তিনি বেশ চিন্তিত। ফলশ্রুতি এই হার্ট অ্যাটাক।
ডাক্তার এসে জানালো অপারেশন করতে হবে। যা এখানে সম্ভব না। ঢাকায় নিয়ে যেতে হবে। দুই ভাই চিন্তিত অবস্থায় হাসপাতালের ক্যান্টিনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কফি খাচ্ছে। আলামিন বলল, “কি যে করি বল তো। আমার আবার এই সপ্তাহে দুটা গুরুত্বপূর্ণ মিটিং আছে।”
আমিনঃ আমারও তো বেশ কিছু সাইটে কাজ পড়ে আছে। এখন কি করা যায়?
- ওদিকে এই মাসে গাড়ি-বাড়ির কিস্তিও বাকি। ডাক্তার বলেছে অপারেশনে লাখ দুয়েকের ওপর লাগবে।
- এসব বাবারই কৃতকর্মের ফল। আজ পর্যন্ত একটা টাকাও যাকাত দেয়নি। আমাকেই দেখ, গত ইদে আমি দুই লাখ টাকার যাকাত দিয়েছি। বাবা তো আমার চেয়েও ধনী ছিল। তবুও কখনো যাকাত দেয়নি।
- ঠিক বলেছিস। পাপের ফল পাচ্ছে। কিন্তু আমাদেরকে ভোগাচ্ছে। ছেলে বলে ঠেকেছি।
- দুনিয়া ছাড়ার আগে আমাদের কিছু টাকা ধ্বংস করে যাবে।
হাসপাতাল থেকেই এ্যাম্বুলেন্স করে সোজা ঢাকায় আনা হলো। সারা পথ নূরী কেঁদেছে। এই নিয়ে আলামিন কয়েকবার ধমকও দিয়েছে। “এত কাঁদার কি আছে? চিকিত্সা তো করছি নাকি? টাকার দিকে তো তাকাচ্ছি না।”
- ভাইয়া তুই এভাবে কথা বলছিস কেন? বাবা কি তোদের অসুখবিসুখে ডাক্তার দেখায়নি?
- হয়েছে আর কথা বলতে হবে না। শেষ বয়সে এসে পাপের শাস্তি পাচ্ছে। কিন্তু জ্বালা সব আমাদের।
- পাপ? কিসের পাপ? কি যা-তা বলছিস?
- বাবা জীবনে একটা পয়সা দান খয়রাত করেছে? হজ্জ্ব করলেই বুঝি আল্লাহর প্রিয় বান্দা হয়? শুধু নামাজ পড়লেই হয়? খারাপ লাগলেও এটা সত্য যে বাবা সারাজীবন মানুষের হক মেরে খেয়েছে।
নূরী চুপ হয়ে গেল। মুখ বুজে কাঁদতে লাগল। এ কথা সত্য যে তার বাবাকে আজ পর্যন্ত দান খয়রাত করতে দেখেনি। এমনকি রমজান মাসে যাকাতও দিতে দেখেনি। তবুও নূরী কাঁদছে। যেমনই হোক বাবা তো। মারিয়া বেগম এ্যাম্বুলেন্সে ছিলেন তাই তিনি জানতেও পারলেন না তার স্বামীর প্রতি ছেলেদের মনোভাব কেমন।
ওটিতে অপারেশন চলছে। ঘন্টখানেক পর ডাক্তার এসে জানালো অবস্থা খুবই জটিল। স্পেশালিস্ট আনতে হবে। এই কথা শুনে আমিন কিছুটা রেগে গেল। বলল, “সারাজীবন অন্যের হক মেরে খেয়েছে। এখন আমাদের টাকা নষ্ট করছে। যতসব জ্বালা।” করিডোরে থাকা মারিয়া এই কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে গেলেন। ছেলে দুটো যে স্বার্থপর হয়েছে তা তিনি অনেক আগেই বুঝেছেন। কিন্তু বাবার এমন মুমূর্ষ অবস্থায়ও এমন কটু কথা বলবে তা তিনি কল্পনাও করেননি। নূরী ডাক্তারের সাথে এসে কথা বলল। মেডিক্যাল স্টুডেন্ট হওয়ায় নূরীকে সবই জানালো। তার বাবার বাঁচার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। নূরী তার মায়ের পাশে এসে দাঁড়ালো।
- আজ যদি আমি ডাক্তার হতাম। তবে যে করেই হোক বাবাকে বাঁচাতাম।
মারিয়া আঁচল চেপে চুপচাপ কেঁদে যাচ্ছেন। কিছুক্ষণ পর তিনি ছেলেদের কাছে এসে হাতের চুড়ি জোড়া দিয়ে বললেন, “এই দুটো বিক্রি করে দে। বাসায় আরও কিছু আছে। সব দিয়ে দিব। তবুও উনাকে বাঁচা। আমি তোদের পায়ে পড়ি।”
আলামিনঃ মা! এসব কি বলছো? আমরা কি চেয়েছি এসব? যা লাগছে করছি তো। তুমি এসব নাটক বন্ধ কর তো।
আমিনঃ এই নূরী মাকে নিয়ে ওখানে বসা তো। আমরা ডাক্তারের সাথে কথা বলে আসছি।
হার্ট স্পেশালিস্ট আসাদ খন্দকারকে ডাকা হলো। সে ঘন্টাখানেক পর ওটি রুম থেকে বের হয়ে এলো। মারিয়া সেখানেই ছিলেন। আসাদকে দেখতেই জিজ্ঞেস করলেন, “ডাক্তার সাহেব, উনি এখন কেমন আছেন?”
- অপারেশন সাকসেসফুল। তবে চব্বিশ ঘন্টা আগে কিছু বলতে পারছি না। আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন। আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।”
আসাদ হাঁটা দিলো। নূরী পিছু পিছু এলো। কিছু দূর আসতেই নূরী ডাক দিয়ে বলল, “আমি একজন মেডিক্যাল স্টুডেন্ট। আমাকে সত্যটা বলুন। বাবার অবস্থা এখন কেমন?”
- আপনার মাকে যা বলেছি তাই।
নূরী কিছুটা ভরসা পেল। সময় যেতে লাগলো। নূরী ও মারিয়ার চিন্তাও বাড়তে লাগলো। এর মাঝে আসাদ বেশ কয়েকবার এসে চেকআপ করে গেছে। এতে হাসপাতালের অনেকেই অবাক হয়েছে। সাধারণত আসাদ অপারেশন শেষে চলে যায়। কিন্তু এবার তেমন হলো না। বরং সে হাসপাতালেই থেকে গেল। বারবার চেকও করলো। এক সহকারী ডাক্তার এসে মারিয়াকে জিজ্ঞেস করলো, “স্যার কি আপনাদের কিছু হয়?”
- কোন স্যার?
- আসাদ স্যার।
- নাতো। কেন?
- আসলে উনাকে আগে কখনো এত উদ্বিগ্ন দেখিনি।
- পৃথিবীতে উনার মতো মানুষেরা আছে বলেই পৃথিবী এখনো বেঁচে আছে।
ক্যাশ কাউন্টারে টাকা দিতে এসে আলামিন বেশ অবাক হলো। তাদের বিল পরিশোধ করা হয়েছে। কে করেছে সেই ব্যাপারে কিছু বলেনি। আলামিন এসে তার মাকে জিজ্ঞেস করলো। তিনি এই ব্যাপারে কিছু জানেন না। পরিবারের বাকিরাও কিছু জানে না। তবে চার লাখ টাকার বিল কে দিলো? এক বিশাল প্রশ্ন থেকে গেল সবার মনে।
এদিকে নার্স এসে সুখবর দিলো। হারুনের জ্ঞান ফিরেছে। প্রথমে আসাদ এলো। বেশ কিছু সময় ধরে সে চেকআপ করলো। তারপর বেরিয়ে এসে বাকিদের দেখা করার অনুমতি দিলো। সপ্তাহ দুয়েক পর হারুনকে বাসায় নিয়ে আসা হলো। আলামিনরা অনেক চেষ্টা করেছে এটা জানার যে, কে বিল দিয়েছিল। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিছুই জানায়নি।
ঘরের পরিবেশ কিছুটা শান্ত হয়েছে। মারিয়া ও নূরী সারাক্ষণ হারুনের দেখাশোনা করে। বড় পুত্রবধূ নামমাত্র আসে-যায়। এদিকে নূরীর মেডিক্যাল পরীক্ষা চলে আসছে। যার জন্য অনেক টাকা লাগবে। নূরী বিভিন্ন মাধ্যম থেকে টাকা জোগাড়ের চেষ্টায় আছে। তবুও ভাইদের কাছে হাত ফেলতে রাজি নয়। এই ব্যাপারে সে তার বাবাকেও নিষেধ করে দিয়েছে। মারিয়া তার গহনা বিক্রি করতে চেয়েছে কিন্তু নূরী তাতেও বাধা দিয়েছে। পুরো ব্যাপারটা জানার পরেও আলামিন-আমিন দুজনের কেউই এগিয়ে আসেনি। তাতে নূরীর কোনো কষ্ট নেই। কেননা সে আগেই জানতো।
নূরী টিউশনের উদ্দেশ্যে বের হবে এমন সময় আসাদকে দেখে সে থমকে গেল। সাথে আরও কয়েক আছে। নূরী বিস্মিত স্বরে বলল, “আপনি? হঠাত্ এখানে?”
- আংকেলের সাথে দেখা করতে এসেছি।
নূরী আরও বিস্মিত হলো। আসাদের মতো একজন নামকরা স্পেশালিস্ট ডাক্তার তার বাবাকে এতো গুরুত্ব দিচ্ছে কেন?
চোখের পলকেই আরেকটি বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে গেল। আসাদের সাথে নূরীর এংগেজমেন্ট হয়ে গেল। আসাদের সাথে যারা এসেছিল তারা তার বাবা-মা ও ভাইবোন। পুরো ব্যাপারটা নূরীর কাছে শুধু স্বপ্নের মতো মনে হয়েছে। যেন সে একটা ঘোরের মধ্যে আছে। এক্ষুণি সেটা ভেঙে যাবে। আসাদ বলেছে হাসপাতালেই নাকি নূরীকে তার পছন্দ হয়েছিল।
নূরীর পরীক্ষার সব খরচ আসাদ বহন করলো। পরীক্ষা শেষ হতেই তাদের বিয়ে হয়ে গেল। বেশ সুখেই তাদের সংসার চলতে লাগলো। একদিন নূরীর সামনে এক সত্য উন্মোচন হলো। যার ফলে তার বাবার প্রতি তার ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা হাজারগুণে বৃদ্ধি পেল। ইদের শপিংয়ে এসেছে নূরী-আসাদ। সাথে আছে তাদের উভয়ের বাবা-মা। শপিং শেষে যখন তারা সিএনজিতে উঠছে তখন হারুনকে দেখে ড্রাইভার সালাম দিয়ে বলল, “আরে স্যার আপনি? কত যে খুঁজেছি আপনাকে!”
হারুন তাকে এড়িয়ে যেতে চাচ্ছিল কিন্তু পারলো না। ড্রাইভার আরও বলল, “আপনি বোধহয় আমাকে চিনতে পারেননি। আমি ভিখারী সুমনের ছেলে। প্রায় দশ-বারো বছর আগে রমজান মাসে আপনি এক ভিখারীকে সিএনজি কিনে দিয়ে বলেছিলেন, আর যাতে ভিক্ষা না করে। মনে পড়েছে?”
- ও হ্যাঁ। ওটা আমি দেইনি। কোম্পানির পক্ষ থেকে ছিল।
- সে যাইহোক। পেয়েছি তো আপনার থেকেই। সেই থেকেই বাবা সিএনজি চালিয়ে সংসার চালিয়েছে। এখন আমি চালাই। আমি এখন দুটো সিএনজির মালিকও।
হারুন ব্যাপারটা দ্রুততার সাথে শেষ করে প্রস্থান করলো। কিন্তু নূরীর মাথা থেকে ব্যাপারটা কোনোভাবেই সরছে না। বাসায় এসেও সে এই নিয়ে ভাবছে। আসাদ বলল, “কি ব্যাপার? কি নিয়ে এতো ভাবছ? কেনাকাটা বাদ আছে নাকি?”
- ভাবছি ড্রাইভারটাকে নিয়ে। সে এত আন্তরিকতার সাথে বাবার সাথে কথা বলছিল। কিন্তু বাবার মাঝে কোনো আন্তরিকতা ছিল না। সে যেন তাকে বিদায় করতে পারলেই বাঁচে এমন ভাব ছিল।
- মহান ব্যক্তিরা এমনই হয়। তারা অনেককিছুই গোপণ রাখতে চায়।
- মানে কি?
আসাদ পুরো ব্যাপারটা খোলাসা করলো। সবাই জানে হারুন কখনোই দানখয়রায় কিংবা যাকাত দেয়নি। কিন্তু প্রকৃত সত্য হলো যতদিন তার সামর্থ্য ছিল সে যাকাত দিয়েছে। কিন্তু সেটা গোপণে। এছাড়াও হারুন প্রতিবার কোনো একজনকে বাছাই করে পুরো যাকাত দিয়ে দিতো। যাতে সেই ব্যক্তির আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন হয়। সেই ড্রাইভার তাদেরই একজন। এমনকি আসাদও তাদের দলে। অনেক বছর আগে আসাদের মেডিক্যাল ভর্তির ফি হারুনই দিয়েছিল। তার উসিলাতেই আজ আসাদ নামকরা ডাক্তার। তাই তো আসাদ এতো গুরুত্ব সহকারে চিকিত্সা করেছিল। যাবতীয় খরচও আসাদই দিয়েছিল।
নূরী তার বাবা-মা, ভাই-ভাবী সবাইকে বাসায় দাওয়াত দিয়েছে। তারপর সবার সামনে হারুনের মহত্বের কথা বলেছে। যদিও হারুন বারবার থামতে বলেছেন। কিন্তু নূরী আজ থামেনি। সে তার ভাইদেরকে জানাতে চায় বাবার মহত্বের কথা। যাতে বাবার প্রতি তাদের ধারণা বদলায়। সবকিছু শুনে আলামিন ও আমিনের মধ্যে অনুশোচনাবোধ কাজ করলো। তারা অন্তরে অন্তরে ভীষণ লজ্জিত হলো।
দুপুরের খাবার খেয়ে সবাই চলে গেল। বাসায় ফিরে হারুন নিজ রুমে এসে শুয়ে পড়লো। মারিয়া তার পাশে এসে বসলো। বলল, “আমি তোমার স্ত্রী। তবুও তুমি আমাকেও এসব কিছুই বলোনি। কেন?” হারুন হাসি দিয়ে বলল, “এসব বলার কি আছে? তাছাড়া হযরত মুহম্মদ (সা.) বলেছেন, দান এমনভাবে কর যেন তোমার বাম হাত না জানে ডান হাত কী দান করল।”
হারুনের কথা শুনে মারিয়া একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, “এতো দান খয়রাত করেছ! আজ তোমার জন্য অন্যরা সুখে আছে। তাহলে আমাদের জীবনে এমন দূর্দশা নামলো কেন? তোমার কতবড় ব্যবসা ছিল! আর আজ কিছুই নেই। আমাদের সাথে কেন এমন হলো? ভালো কাজের প্রতিদান আল্লাহ এইভাবে দিলো?”
হারুন উদ্বিগ্ন স্বরে বলে উঠলেন, “হায়! হায়! এসব তুমি কি বলছো? তওবা করো। আমার জন্য কেউই ভালো নেই। সবই আল্লাহর জন্য ভালো আছে। আমি তো কেবলমাত্র উছিলা। আর প্রতিদানের কথা বলছো? আমি যদি উপযুক্ত হই তবে আল্লাহ আখিরাতে সেটা অবশ্যই দিবেন। তবে এই দুনিয়াতেও কিন্তু আমি প্রতিদান পেয়েছি।”
- কোথায় পেলে? ব্যবসা শেষ এই বুঝি প্রতিদান?
-তুমি দেখতে চাচ্ছ না তাই দেখতে পাচ্ছ না। এই যে দেখ, আমাদের দুই ছেলে আজ প্রতিষ্ঠিত। সমাজে তাদের ভালো নামডাক রয়েছে। কোনো অসত্ পথে যায়নি। বাবা হিসেবে এরচেয়ে উত্তম প্রতিদান কি হতে পারে? তারপর মেয়েটাকেই দেখ। ডাক্তার হতে পেরেছে। আসাদের মতো সত্ পাত্রের হাতে মেয়েকে তুলে দিতে পেরেছি। জীবনে আর কি লাগে? এসব কি আল্লাহর দেওয়া প্রতিদান নয়? পরিশেষে সবকিছুর জন্য আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জানানো উচিত। আলহামদুলিল্লাহ।”
মারিয়া ভাবনায় পড়লেন। আসলেই তো। এসবই তো প্রতিদান। তিনি মনে মনে তওবা করলেন আর আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জনালেন হারুনের মতো একজনকে জীবনসঙ্গী হিসেবে দেওয়ার জন্য।
সমাপ্ত।
লিখেছেনঃ মোঃ জোবায়ের বাপ্পী।
Comments (0)