আকাশে তারা গুনছে মেঘলা,ও প্রতিদিনই রাতে ছাদে এসে তারা গুনে, পড়ার মাঝে ঠিক সময় বার করে নেয়।
তেমনি আজও এসেছে ছাদে,
হ্যালো নীল বলো! (মেঘলা)
কি করছো ,আজ ফোন করার সাথে সাথেই ধরে ফেললে ? (নিখিল)
আসলে এখন ছাদে আছি তো কেউ নেই এখানে তাই (মেঘলা)
আচহা বলছি তুমি পরশু দিন আসতে পারবে একটা জায়গায়? (নিখিল)
কোথায় ? (মেঘলা)
আমি তোমাকে জায়গাটার সব ডিটেলস্ পাঠিয়ে দিচিই,প্লিজ বিকালে আসবে আর আমার দেওয়া কালো সাদায়
শাড়িতে তোমাকে দেখতে চাই (নিখিল)
আচহা তাই হবে আমি যাবো,এমনিতেও সেদিন দাভাইএর জন্য পাত্রী দেখতে যাবে বাড়ির সবাই (মেঘলা)
আচহা, আমি কদিন আগে দেখলাম তোমার কলেজের বন্ধুদের মধ্যে কজন ছেলেও ছিল ওরা কে ? (নিখিল)
আমার নীলের দেখছি সবদিকেই নজর ,ওরা হচ্ছে রিমি ,মণিসার বয়ফ্রেন্ড (মেঘলা)
ঠিক তো? (নিখিল)
হমমৃ ,আচ্ছা বলছি আমি এখন রাখছি হ্যাঁ পড়ে কথা হবে (মেঘলা)
মেঘলা ফোন কেটে নিচে চলে গেলো।
তৃতীয়দিন,
মেঘলা নিখিলের বলে দেওয়া সেই জায়গায় উপস্থিত হয়েছেকিন্তু আসল মানুষেরই দেখা নেই। মেঘলা বারবার
ফোন করছে কিন্তু ফোন রিসিভ করছে না।
কিছুক্ষণ পর,
একজন অপরিচিত লোক এসে হঠাৎ করে মেঘলার সামনে গোলাপফুল হাটু গেরে বসে পরলো,
আপনাকে আমার খুব পছন্দ, will you except my proposal, will you call me with this number ?(অপরিচিত)
Sorry, Mr. already I am in a relationship so bye bye? (মেঘলা)
আমি কিন্তু অনেক বড়োলোক বাড়ির ছেলে ,এমনকি আমি দেখতেও খুব হ্যান্ডসাম তাহলে কেন আমাকে
রিজেক্ট করছেন ? (অপরিচিত)
আমি আপনাকে কতবার বলবো যে আমার বিএফ আছে তাই তাকে ছাড়া কাণ্ডকে ভালোবাসতে পারবো না (মেঘলা)
এটা কিন্তু ভালো হলো না এর দাম আমি করায় গন্ডায় উসুল করে নেবো ( অপরিচিত)
এই ঘান তো (মেঘলা)
লোকটা চলে যাবার পনেরো মিনিট পর নিখিল এলো ,
এই তুই কোথায় ছিলি বলতো £ কখন থেকে ওয়েট করছি! ফোনটাও রিসিভ করছিস না (মেঘলা)
এই মেঘা রেগে যাচ্ছো কেন ? আসলে আকাশ বললো ওর কাছে যেতে কী দরকার আছে তাই গেছিলাম কিন্তু
যেয়ে দেখি ঘর চাবি তাই ফিরে আসতে দেরি হলো আর ফোনটার আমার সাউন্ড ওফ ছিলো ,সরি মেঘা (কান
ধরে নিখিল)
আর এরকম ভুল হবে না তো? (মেঘলা)
না গো হবে না! এবার চলো আমার সাথে (নিখিল)
হমম্ চলো (মেঘলা)
নিখিল মেঘলাকে চোখ বেঁধে একটা জায়গায় নিয়ে গেলো,
যখন চোখটা খুললো মেঘলা তখন মনোরোম সুন্দর দৃশ্য দেখতে পেলো ,
চারিদিকটা ফাঁকা মাঠ মাঠটা ছোটো ছোটো লাভ সেপ ঝোপে ঘেরা ,সন্ধ্যেবেলা বলে সেখানে জোনাকি আলো
জ্বালা আছে 'মাঠটার মাঝখেনটায় বড়ো সুন্দর ফোয়ারা ।ফোয়ারাটাও জোনাকি আলো দিয়ে সাজানো আছে।
কিছুটা এগিয়ে গিয়ে দেখলো ফোয়ারার দিকে পেছন করে দুসারি চ্যায়ার টেবিল যেটাও লাভ শেপ আলোক ফুল
দিয়ে সাজানো ।
চ্যায়ারের মুখগুলো যেদিকে সেদিকে একটা রঙিন পর্দা আছে যেটায় নানাধরনের দৃশ্য সিলেক্ট করে ফটো
তোলা যায়।
এত সুন্দর জায়গা ষে এই এলাকায় থাকতে পারে সেটা মেঘলার ভাবনার বাইরে ।কিন্তু কাছেপিঠে কোথাও
নিখিলকে দেখতে পেলো না।
চারিদিকে খুজতে খুজতে খন পর্দার সামনে এলো তখন পর্দা সমুদ্রে সূর্ধাত্তের ছবি ফুটে উঠলো তারপর,
ভালো লাগে তোমার কাছাকাছি এলে, ভালোবাসি তোমায় কাহ্াকাছি পেলে, (মোর)
নিখিল ঘে এতো সুন্দর গান গায় তা না শুনলে বুঝতে পারতো না মেঘলা ।ওর মুখ দিয়ে কোনো শব্দ বের হতে
চায়ছে না।
নিখিলই বলা শুরু করলো,
আসলে আমি এই সুন্দর জায়গাটা কপলদের জন্য করেছি,কিন্তু উদ্বোধনটা তোমাকে দিয়ে করলাম।তা বলো
আমার গানটা কেমন লাগলো ? (নিখিল)
আমি আজ ভীষণ খুশি তুমি আমাকে এতটা সারপ্রাইজ দেবে আমি ভাবতে পারিনি ,কিন্তু তুমি গানটা পুরো
আমার প্রিয় গায়ক নীল আচার্ষের মতো গেয়েছো! (মেঘলা)
এন. এ তোমার প্রিয় গায়ক? (নিখিল)
হমম্ “তা নয়তো খুব সুন্দর গায়ক কিন্তু আমার শুধু তার গানটায় পছন্দ ,তাকে নয় সে কী এমন দেখতে ষে
সবসময় মুখে মাস্ক ,পুরো শরীর কালো ড্রেসে ঢাকা ! আমার তো মনে হয় ভীষণ অহংকার আছে লোকটার! (
মেঘলা)
কথাটা শুনে নিখিলের বিষম লেগেছে ,সে কাশতে শুরু করেছে।
কী হলো নিখিল কাশছো কেন নাও জল খাও (মেঘলা)
মেঘলা তার সাইডব্যাগ থেকে একটা ছোটো জলের বোতল বার করে দিলো।
আমি আসছি তুমি এখানেই বসবে (নিখিল)
নিখিল একথা বলে মেঘলাকে বসিয়ে রেখে মাঠের বাইরে গিয়ে একটা ছোটো রুমে ঢুকে পড়লো।
কিছুক্ষণ পর মেঘলার সামনে এলো এন. এ।
ও মাই গড নীল তুমি আমাকে আর কতো সারপ্রাইজ দেবে মিস্টার. এন. এ (মেঘলা)
আরো অনেক কিছু বাকি আছে মেঘা! (এন.এ)
আপনি নিখিলের মতো বলছেন কেন ? (মেঘলা)
মিস্টার নীল আচার্য তার মুখের মাস্কটা খুলে ফেললো।
নিখিল তুমি তুমি বিখ্যাত গায়ক নীল আচার্য (মেঘলা)
এবার বলো আসল চমকটা কেমন লাগলো ,তবে ভাবছি এবার তোমার সাথে ব্রেকআপ করে নেবো (নীল)
নৌল ই বলছি)
কী বলছো নীল ,এসব বলো না আমি তোমাকে ছাড়া বাচতে পারবো না)( মেঘলা)
কিন্তু আমার কী রাগ হবে না! একে তো একটা ইয়াং ছেলেকে লোক বলেছো আবার অহংকারী! (নীল)
কী করবো আমার তো সেরকমই মনে হয়েছিল ,ওরকম মুখ ঢাকার মানেই বা কী শুনি? (মেঘলা)
আসলে আমার বাপিই তো বলেছিল আমি খনই গান গাওয়ার সময় স্টেজে উঠবো তখন যেন এরকম করে
যাই! আমিও ঠিক এর কারণটা জানি না (নীল)
এরপর দুজনে বসে গল্প করতে লাগলো।মেঘলার খুশি তো আর ধরে না ওর বয়ফ্রেন্ড ওর প্রিয় গায়ক!
আটটা বাজতেই মেঘলা বাড়ি ফিরে গেলো।
মেঘলার বাড়ি ফেরার কিছুক্ষণ পর ওর বাড়ির বাকি সবাই বাড়ি ফিরে এলো। সেখান থেকে মেঘলা জানতে
পারলো মেয়েটিকে নাকি সবার খুব পছন্দ তাই একমাস পর বিয়ের কথা একেবারে ঠিক করে এসেছে।
একমাস পর,
আজ মেঘলার দাদা রাঘবের বিয়ে।সকাল থেকেই দধিমঙ্গল,গায়েহলুদ এরকম অনুষ্ঠানে সবচেয়ে বেশি
হইহুল্লোর করছে মেঘলা ।সবচেয়ে খুশি যেন আজ সে।এই আনন্দে সে নীলের সাথে দুসপ্তাহ দেখা করেনি
,আজ ফোন করার তো কোনো কথাই ওঠে না।
এখন সবাই বরযাত্রী হিসেবে যাবে বলে সাজগোজ করছে ।সবাই রেডি হবার পর বরযাল্রীরা বাসে করে রওনা
হলো।
কনের বাড়ির লোকেরা ওদের আপ্যায়ন করেছে।
কিছুক্ষণ পর বিয়ে শুরু হলো।
মেঘলার খুব জল তেষ্টা পাওয়ার ও জল খাবার জন্য একটু সাইডে গেলো,আর তখনি ওকে কেউ মুখ চেপে টেনে
ছাদে নিয়ে এলো।
মানুষটা মেঘলার ঠোঁটের সাথে ঠোট মিলিয়ে দিলো। মেঘলা প্রথমে কিছু বুঝতে না পারলেও পরে রেসপন্স
করতে শুরু করলো।
পান্কা দশ মিনিট পর ছেড়ে দিয়ে হাপাতে লাগলো।
তুমি এখানে কী করছো ? কেউ দেখে ফেললে কী হবে বলোতো! (মেঘলা)
আমার তো জিজ্ঞাসা করার কথা তুমি এখানে কী করছো! তুমি বলেছিলে যে আজ তোমার দাদার বিয়ে
সেইজন্য তুমি আমার সাথে দেখা করোনি ফোন করোনি শুধ সামান্য ম্যাসেজ (নীল)
আমি তো আমার দাদার বিয়েতেই আছি কিন্তু তুমি কেন তুমি কী কনেযাত্রীর লোক? (মেঘলা)
হমমৃ আমার পিসিমণির মেয়ে মানে ঈশির সাথেই তো তোমার দাদার বিয়ে হচেহে! (নীল)
এবার ছাড়ো আমাকে যাই আমি বিয়ে মনে হয় শেষ হয়ে গেলো! (মেঘলা)
মেঘলা যখনি যেতে যাবে তখনি নীল তাকে টেনে নিজের বুকে এনে ফেলে। লাল ল্যাহেঙ্গা হাতে ছোট্ট সরু
ব্রেসলেট লম্বা ইয়ারিং মুখে হালকা মেকআপ ,ঠোঁটে লাল লিপস্টিক! একেবারে অসাধারণ লাগছে মেঘলাকে।
নীল মেঘলার কানের কাছে উড়তে থাকা চুলগুলো সরিয়ে ঘাড়ের কাছটা ফাকা করলো ,তারপর হালকা ঘাড়ে
ঠোঁট ছুইয়ে কানে কানে বললো ,
আজ আমার লাল পরীটা সোন্দর্ষে স্বর্গের অণ্সরাকেও হার মানাবে (নীল)
মেঘলার মুখটা সঙ্গে সঙ্গে লজ্জায় লাল হয়ে গেলো ।হঠাৎ বললো,
তোমার বাবা আসছে নীল! (মেঘলা)
সঙ্গে সঙ্গে নীল ছেড়ে দিলো মেঘলা দিলো দৌড়। তখন নীল পাগলী বলে হেসে গড়াগড়ি ।
এভাবেই চলতে লাগলো মেঘলা আর নীলের প্রেমের গাড়ি। দেখতে দেখতে দুবছর পেরিয়ে গেছে।এই সময়ে
ওদের সম্পর্কটা আরো গভীর হয়েছে৷নীল গানের জগৎএ আরো বিখ্যাত হয়েছে আর মেঘলা একটা সরকারি
স্কুলে চাকরি পেয়েছে।
মেঘলা চাকরি না পাওয়ার জন্য নিজের বিয়েটা আটকে রেখেছিল কিন্তু চাকরি হয়ে যাওয়ায় মেঘলার বাবা পাত্র
দেখতে শুরু করেছে।
মেঘলা নীলকে অনেকবার বলেছে বিয়ের সম্বন্ধ নিয়ে ওদের বাড়িতে আসতে কিন্তু নীল শুধু সান্তনা দিয়েছে৷
একদিন রঘুমানবাবু অর্থাৎ মেঘলার বাবা এসে বললেন যে তিনি একজনের সাথে মেঘলার বিয়ে ঠিক করেছেন ।
কিন্তু ওদের নিয়ম আছে শুভ দৃষ্টির আগে পাত্র পাত্রী পরস্পরের মুখ দেখবে না।
মেঘলা সবকিছু ফোনে নীলকে জানায় “তখন নীল বললো,
আচ্হা তুমি আমার সাথে সিক্রেট রিলেশনসিপে থাকবে ? (নীল)
আমাদের রিলেশনসিপটা তো সিক্রেটই! (মেঘলা)
আমি সেটা বলছি না তুমি আমার বাড়িতে আমার রুমে আমার সাথে থাকবে বিয়ে ছাড়া? (নীল)
কী বলছো কী বিয়ে না করে কীভাবে থাকবো ? আমি পারবো না (মেঘলা)
আমি এমনি বলছিলাম মেঘা ,ঠিকাছে আমি দেখছি কী করা যায়? (নীল)
হমম্ (মেঘলা)
মেঘলা ফোন কেটে মনমরা হয়ে বসে পড়লো। তারপর থেকে যখন মেঘলা নীলকে ফোন করতো নীল এভাবেই
সান্তনা দিতো।
বিয়ের একসপ্তাহ আগে সময় থেকে নীল আর ফোন ধরতো না বা সুইচ অফ দেখাতো।
মেঘলার এরপর ভীষণ টেনশন হতে লাগলো। তবু নীলকে ভর্সা করে বলে নিজেকে সংযত রাখলো।
কিন্তু বিয়ের আগের দিন নিজের এক বন্ধবীর কাছে জানতে পারলো মিস্টার নীল আচার্ষের বিয়ে ঠিক হয়েছে।
বিশাল বড়ো করে বিয়ে হবে তার। খুব সুন্দরী একটি মেয়েকে বিয়ে করছে সে।
মেঘলা এবার বুঝতে পারলো নীলের ফোন সুইচ অফ দেখানোর কারণটা। একটা সুন্দরী মেয়েকে পেয়ে সে
মেঘলার সাথে তিনবছরের সম্পর্ককে ভুলে গেলো! সুন্দরী মেয়েটা কী ওর সাথে লীভ ইন করবে বলেছে নাকি ও
আমার ওপর প্রতিশোধ নিচ্ছে লীভ ইন করবো না বলেছি বলে! মেঘলাকে দেওয়া সব প্রতিশ্রুতি ভুলে গেলো।
নীল মেঘলা দুজন পরস্পরকে কথা দিয়েছিল তারা একে ওপরকে ছাড়া আর কাওকে বিয়ে করবে না।
মেঘলার মাথাটা ঝিম হয়ে আসতে লাগলো কী করবে কিছু বুঝতে পারলো না।
কিছুক্ষণ পর সিদ্ধান্ত নিলো নীল যতই সব প্রতিশ্রুতি ভুলে যাক ও ভুলে ঘাবে। ও নীলকে ছাড়া আর কাওকে
বিয়ে করবে না। এখন নীলের কাছে যাওয়াটাও নিজের অপমান । তাই ঠিক করলো নিজে এই পৃথিবী থেকে
বিদায় নেবে।
নিজের মা বাবার জন্য খুব কষ্ট হলেও নিজেকে শান্ত করলো।টেবিলে একটা চিঠি লিখে রেখে দিলো।
ওর কাছে অনেকগুলোয়হাই পাওয়ারের ঘুমের ওষুধ আছে সেগুলি হাতে নিলো।
কাঁদতে কাঁদতে সেগুলি খেয়ে নিলো। তারপর শুয়ে পড়লো।চিরদিনের জন্য ঘুমিয়ে পড়লো সে।
বিয়ের দিন সকালবেলা ,
মেয়ের ঘরে ঢুকে রঘুমান বাবু মেয়েকে ডাকতে শুরু করেছিলেন,তারপর পার্লস না পাওয়ার ভয় খেয়ে যান।
সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার ডাকা হয়.তিনি এসে সব দেখে মেঘলাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সবাই ভীষণ কাদতে থাকে। তখন নির্মলাদেবী অর্থাৎ মেঘলার মায়ের টেবিলে থাকা একটা কাগজে নজর
পড়লো।
কাগজের লেখাটা পড়ে রেগে গেলেন মেয়ের লেখা উক্ত ব্যাক্তিটির ওপর কিন্তু কে সেটা তো বুঝতে পারলো না।
কনে মৃত শুনে ছেলের বাড়ির লোক যে কী রিএকু করবে সেটা বুঝতে পারলেন না। এমনিতে মেঘলার শোকে
বেশিরভাগ সবাই পাথর হয়েগেছে।
উনি পাত্রের ফোনেই ফোন লাগায়,
হ্যালো (নীল)
বাবা তুমি কী একবার আমাদের বাড়িতে আসতে পারবে? (রঘুমানবাবু)
কিন্তু আজ তো আমাদের বিয়ে! (নীল)
মেঘলা যে ...(রঘুমানবাবু)
কী হয়েছে মেঘলার ? আমি এক্ষুনি আসছি! (নীল)
নীলের সকাল থেকেই কেমন যেন একটা ভয় লাগছিল কিছু একটা খারাপ হতে চলেছে কিন্তু কী সেটা বুঝতে
পারেনি । এখন পুরো হাতপা ঠান্ডা হয়ে আসছে। নীল তাড়াতাড়ি ড্রাইভ করে মেঘলার বাড়িতে চলে আসে
(সোজা মেঘলার রুমে চলে যায় ,সেখানে গিয়ে দেখে সবাই কাছে ,খাটের একপাশে মেঘলা শুয়ে আছে। বুকটা
কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগে নীলের।
কী হয়েছে মেঘলার ? এই মেঘা এখনো ঘুমচিহস কেন ? আজ তোর বিয়ে না ! (নীল)
আমাদের মেঘলা আর বেঁচে নেই নীল! তোমার হবু বউ আর বেঁচে নেই! ও আত্মহত্যা করেছে (নির্মলাদেবী)
মেঘা কী পাগল নাকি যে ও আত্মহত্যা করতে যাবে ? এই মেঘা ওঠ দেখ তোর নীল এসেছে এখনই বিয়ে করে
নেবো আমরা আর তোকে কোনো কষ্ট দেবো না ! (নীল)
তুমি মেঘলাকে আগে থেকে চেনো? এই মেঘলা একটা চিঠি লিখেছে !( রঘুমানবাবু)
নীল চিতিটা নিয়ে পড়তে শুরু করলো,
" প্রথমেই আমি আমার গুরুজনদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
জানি তোমরা খুবই কষ্ট পাবে,কিন্তু আমার কিছু করার নেই।
আমি একজনকে মন প্রাণ দিয়ে ভালোবাসতাম কিন্তু সে কথা রাখেনি বিয়ে করছে অন্য কাওকে !
না আর আমি তো কোন ছাড়! তবে কাল যদি আমি অন্যকাওকে বিয়ে করি তাহলে তাকে আমি
কোনোদিনই ভালোবাসতে পারবো না €।না সে সুখি হবে না আমি ! তাই আমার প্রেমিককে দেওয়া
কথা রাখতে আমি চলে যাচ্ছি সবাইকে ছেড়ে বিদায় ! কেউ কষ্ট পেওনা আমার জন্য ! সবার জন্য
শুভকামনা
চিঠিটা পড়েই নীল ধপ করে মাটিতে বসে পড়লো,আজ ওর চোখ বাধ মানছে না ঝরঝর করে ঝরে পড়ছে ।মেঘলার মৃত্যুর থেকে বেশি কষ্ট দিচ্ছে মেঘলার অবিশ্বাস।
কী হলো বাবা তুমি কী জানো মেঘলার প্রেমিক কে? (নির্মলাদেবী)
আজ মেঘার প্রেমিকের থেকে অসহায় কেউ বোধহয় আর নেই! এতটা অবিশ্বাস আমি ভাবতে পারছি না
যদি একটু বিশ্বাসই না থাকে তাহলে ভালোবেসেছিল কেন? কেন বেসেছিল? (নীল)
সে অসহায় হবে কেন? (নির্মলাদেবী)
সে আপনি বুঝবেন না! (নীল এই কথাটি বলে ছুটে বাইরে বেড়িয়ে যায়। সব খারাপলাগা যেন আজ ওকে ছেকে
ধরেছে।)
পাঁচ মাস পর,
এইকমাসে নীল একদম পালটে গেছে। তবে সে বুঝতে পেরেছে ওকে আর মেঘলাকে আলাদা করার জন্য
নীলের বাবা নীলান্তর বাবু কলকাটি নেরেছিলেন যাতে তার বন্ধুর মেয়ে তৃষার সাথে নীলের বিয়েটা দেওয়া যায়।
তাই নীল তার পরিবারের সাথে সম্পর্ক ছেদ করেছে৷
আজ নীল একটা প্রোগামে গান গায়তে গিয়েছে,
মন চল্ঞতল, থাকো সচ্ছল
জল টলমল , আকাশও উজ্জ্বল ..
সব যদি ঠিক নাও থাকে ,
ভরে যায় শুধু যদি আধারে _
এই মনের মাঝে এই প্রাণের মাঝে
ভাঙা হৃদয়টা যে লুকিয়ে আছে
(কেমন লাগলো বন্ধুরা )
Comments (0)